কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : নিজের অবর্তমানে স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ তুলে, এক ব্যক্তি তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বর্তমানে তিনি যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরের ৩৫ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। গত শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কোটচাঁদপুর ব্রিজঘাট হালদার পাড়ায়।

অগ্নিদগ্ধ ওই ব্যক্তির নাম গোপাল বিশ্বাস (২৫)। তিনি ঝিনাইদহ মথুরাপুর এলাকার বনমালী বিশ্বাসের ছেলে। কোটচাঁদপুর ব্রিজঘাট হালদারপাড়ার পরিতোষ হালদারের মেয়ে রুপা হালদারের স্বামী।

কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আগুনে গোপালের শরীরের ৩৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তাঁর অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’ 

পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, প্রায় ৩ বছর আগে রুপা হালদার ও গোপাল বিশ্বাসের বিয়ে হয়। প্রথম দুই বছর তাদের সংসার ভালোই চলছিল। এর মধ্যে ওই দম্পতির সংসারে একটি সন্তানও হয়েছে। হঠাৎ করে কাউকে কিছু না বলে পালিয়ে যান গোপাল বিশ্বাস। এরপর তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি তাঁর পরিবার। গত ৩ দিন হলো তাঁকে কোটচাঁদপুর এলাকায় দেখা যায়। তবে তিনি শ্বশুর বাড়ি না গিয়ে এদিক সেদিক ঘুরছিলেন। 

গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তিনি তাঁর স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেন তিনি মারা যাচ্ছেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে কিছুক্ষণ পর শ্বশুরবাড়িতে যান গোপাল বিশ্বাস। সেখানে তাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে স্ত্রীর সামনেই শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন তিনি। এ সময় তাঁর স্ত্রী বাধা দিলেও তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে এ ঘটনা ঘটান গোপাল। এ সময় পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করে। 

এ বিষয়ে গোপালের স্ত্রী রুপা হালদার বলেন, ‘৩ বছর আগে তাঁর (গোপাল) সাথে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমরা ভালোই ছিলাম, আমাদের একটা বাচ্চাও আছে। গেল এক বছর হঠাৎ করে সে হারিয়ে যায়। কিছুদিন হলো এলাকায় আসছে কিন্তু আমার সাথে দেখা হয়নি। শুক্রবার রাতে ফোন করে বলে, আমি মৃত্যুর মুখে, তুমি ভালো থাকো। এ কথা শুনে আমি তাঁর সাথে দেখা করার জন্য অনুরোধ করি। সে আমার অনুরোধে বাড়িতে এসে ঘটায় এ দুর্ঘটনা।’ 

তবে ভুক্তভোগী গোপাল বিশ্বাসের দাবি তাঁর অবর্তমানে স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছেন। শ্বশুরবাড়ি এলাকায় ফিরে তিনি এ তথ্য জেনেছেন। এরপর কয়েক দিন ধরে ওই এলাকায় তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেন তিনি। 

অগ্নিদগ্ধ গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘আমি পালিয়ে যায়নি। আমি তাঁর জন্য টাকা রোজগার করতে গিয়েছিলাম। তবে বুঝতে পারিনি, এসে তাঁকে হারিয়ে ফেলব। আমার কাছে সব প্রমাণ আছে।’